
প্রকাশিত: Wed, Dec 6, 2023 12:14 PM আপডেট: Tue, Jun 24, 2025 1:49 AM
বাংলাদেশের নির্বাচন ইস্যুতে আমেরিকার ভূল কূটনৈতিক কৌশল
জিল্লুর রহমান: ৭ জানুয়ারি ২০২৪ সালের নির্বাচন নিয়ে আমেরিকা এবং তাদের মিত্রদের অবস্থান, বক্তৃতা বিবৃতি বিভ্রান্তিকর।
তারা বলছে একটি অংশগ্রহণমূলক, সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন আশা করছে, কিন্তু কীভাবে? এই সরকারের অধীনেই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব, না বিকল্প কোন সরকারের অধীনে?
তারা কখনোই বলছে না যে, বর্তমান সরকারের অধীনে অংশগ্রহণমূলক, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।
তারা বরং বলছে যে, বাংলাদেশে কোন দলের পক্ষ নিয়ে কাজ করছেন না, তাদের অবস্থান অবাধ,অংশগ্রহণমূলক এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে।
অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বলতে তারা আসলে কি বুঝাতে চাচ্ছেন, সেটিও স্পষ্ট করছেন না, তারা কখনোই বলেন নাই বিএনপিকে নিয়েই ইলেকশন করতে হবে, না হয় নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না, বৈধতা পাবে না।
অনেকেই বলতে পারেন কূটনৈতিক ভাষা এমনই, এখানে ইঙ্গিতপূর্ণ কথার মাধ্যমেই বুঝে নিতে হয়।
বিষয়টি আসলেই কি তাই?
অবশ্যই নয়, ২০০৮ সালের নির্বাচন পরবর্তী বিবিসি বাংলার একটি প্রতিবেদনে দেখা যায়, ঐ নির্বাচনকে বেশ দ্রুততার সাথে স্বীকৃতি দিয়েছিল আমেরিকা। ভোট গ্রহণ শেষ হবার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আমেরিকার স্টেট ডিপার্টমেন্ট এক বিবৃতিতে বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন এবং নির্বাচনের সাথে সম্পৃক্ত সরকারি কর্মকর্তাদের অভিনন্দন জানিয়েছিল একটি সফল নির্বাচন আয়োজনের জন্য।
স্টেট ডিপার্টমেন্টের বিবৃতিতে বলা হয়, নির্বাচনের বিপুল সংখ্যক মানুষ ভোট দিতে আসা প্রমাণ করে যে বাংলাদেশের মানুষের গণতন্ত্র পুনরায় প্রতিষ্ঠার আকাক্সক্ষা রয়েছে।
নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী আমেরিকান সংস্থা ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইন্সটিটিউট (এনডিআই) তাদের এক বিবৃতিতে ২০০৮ সালের নির্বাচনকে বিশ্বাসযোগ্য এবং আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন বলে বর্ণনা করেছিল।
এনডিআইর বিবৃতিতে বলা হয়, নির্বাচন বেশ ভালোভাবে পরিচালনা করা হয়েছে এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
লক্ষ্য করুন, খুবই সুস্পষ্টভাবে আমেরিকা ২০০৮ সালের নির্বাচন নিয়ে তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলো। ২০১৪, ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়া বিএনপি বা বিরোধী দলের জন্যে খুব একটা আশাব্যঞ্জক ছিলো না।
আন্তর্জাতিক রাজনীতি নিয়ে কাজ করেন, এমন বিশেষজ্ঞদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র যদি সত্যিই বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা শক্তিশালী দেখতে চাইতো, তবে ২০১৪ নির্বাচনের পরপরই নানা রকম নিষেধাজ্ঞা দিতে পারতেন এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনকে দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক মহলে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানে সরকারকে বাধ্য করতে পারতেন।
বর্তমান প্রেক্ষাপট বলে দেয়, সেই সময়ে আমেরিকার ভূল কূটনৈতিক কৌশলই বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির ক্যানভাস তৈরি করেছে।
প্রশ্ন আসতে পারে, ২০১৪ আর ২০১৮ সালে তারা যা চায়নি, ২০২৪ সালে এসে অংশগ্রহণমূলক, অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন তারা চাইছে, এর বিশ্বাসযোগ্য ভিত্তি কি?
বরং বিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন, তারা গণতন্ত্র, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের আড়ালে আসলে কী চাচ্ছেন?
তারা যেদিকে ঢিল ছুঁড়ে বাংলাদেশের জনগণের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইছেন, উদ্দেশ্য কিন্তু তা নয়, এরা যাদু দেখানোর মত মানুষকে মন্ত্রমুগ্ধ করে নিজেদের কৌশল আড়াল করছেন, যেমন করে থাকেন যাদুকরেরা।
যুক্তরাষ্ট্র যা করতে চাচ্ছে, তার জন্যে প্রয়োজন একটি অরাজনৈতিক বিকল্প শক্তি, সেখানে বিএনপি আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ থাকবে না।
অবাধ নির্বাচন হলে বিএনপি ক্ষমতায় চলে আসবে, এই বাস্তবতার কারণে যুক্তরাষ্ট্র এখনি কোন অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে নয়। আবার এই সরকারকেও তারা ক্ষমতায় দেখতে চায় না।
গত এক বছরে বাংলাদেশে তারা যে কৌশল অবলম্বন করছে, এর উদ্দেশ্য হচ্ছে তাদের মদদপুষ্ট অরাজনৈতিক শক্তিকে ক্ষমতায় নিয়ে আসা।
কিন্তু এই কৌশলটি শেখ হাসিনা ধরে ফেলেছেন, তাই তিনি আমেরিকাকে চ্যালেঞ্জ করে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন।
এক্ষেত্রে তিনি নির্ভার থাকছেন বিরোধী দলের নিষ্প্রভ আন্দোলনের উপর, কারণ তিনি জানেন বিরোধী দলের পক্ষে এমন কোন আন্দোলন গড়ে তোলা সম্ভব নয়, যে পরিস্থিতিতে সরকার বাধ্য হয় ক্ষমতা ছেড়ে দিতে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে আমেরিকা কী করতে পারেন সেটা যেমন দেখার বিষয়। তেমনি বর্তমান সরকার বৈশ্বিক চাপ নিয়ে কতটুকু যেতে পারেন, সেটাও দেখার বিষয়।
আরও সংবাদ
চ্যাম্পিয়ন ভারত : একটা ছোট মুহূর্ত কতো বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে
‘ওই ক্যাচ হয়নি, সুরিয়াকুমারকে আবার ক্যাচ ধরতে হবে’!
কতো দেশ, কতোবার কাপ জিতলো, আমাদের ঘরে আর কাপ এলো না!
সংগীতাচার্য বড়ে গোলাম আলি খান, পশ্চিমবঙ্গের গর্ব সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও আমি
ইন্ডিয়ান বুদ্ধিজীবী, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ও দেশের বুদ্ধিজীবী-অ্যাক্টিভিস্ট
মতিউর প্রতিদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ৮৩ ব্যাচের বন্ধুদের গ্রুপে সৎ জীবন যাপনের উপদেশ দিতেন!

চ্যাম্পিয়ন ভারত : একটা ছোট মুহূর্ত কতো বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে

‘ওই ক্যাচ হয়নি, সুরিয়াকুমারকে আবার ক্যাচ ধরতে হবে’!

কতো দেশ, কতোবার কাপ জিতলো, আমাদের ঘরে আর কাপ এলো না!

সংগীতাচার্য বড়ে গোলাম আলি খান, পশ্চিমবঙ্গের গর্ব সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও আমি

ইন্ডিয়ান বুদ্ধিজীবী, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ও দেশের বুদ্ধিজীবী-অ্যাক্টিভিস্ট
